বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা - বিটরুট পাউডার খাওয়ার নিয়ম। বিস্তারিত জানুন

ড্রাগন ফল - ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা। বিস্তারিত জানুনহ্যালো অডিয়েন্স, আপনি কি বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা, বিটরুট পাউডার খাওয়ার নিয়ম কি এই সব বিষয়ে জানতে আগ্রহী ? যদি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আজকে এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা, বিটরুট পাউডার খাওয়ার নিয়ম।
বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা
সাথে আরো আলোচনা করতে যাচ্ছি বাচ্চাদের বিটরুট খাওয়ার নিয়ম এবং বিটরুট সম্পর্কিত আরো অনেক বিষয়। সুতরাং আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন এবং জেনে নিন বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা, বিটরুট পাউডার খাওয়ার নিয়ম।

সূচিপত্রঃ বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা

ভূমিকা

দেখতে গোলাপি রঙের এই সবজিটির নাম বিটরুট। যার বৈজ্ঞানিক নাম বেটা বালগানিস, এই সবজিটির রয়েছে অনেক ঔষধি ও পুষ্টি গুনাগুণ। বিটরুট কোলন ক্যান্সার, রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এই সবজিটির অনেক ঔষধি ও পুষ্টি গুন থাকলেও এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। বিটরুট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিটরুট শীতপ্রধান সবজি হলেও বর্তমানে সারাবছরই এই সবজিটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। বিটরুটের বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা কি তা আমরা অনেকেই জানি না। বিটরুট থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারিতা পেতে হয়ে বিটরুট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনার পরিষ্কার ধারনা থাকা দরকার। নিচে বিটরুট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

বিটের উপকারিতা

আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য বিটরুট খাওয়া অত্যন্ত উপকারী কারন এতে রয়েছে নাইট্রেটস, যা মানব শরীরের রক্তনালীকে প্রসারিত করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। আপনারা যারা অনেকদিন ধরে অনেক কিছু ট্রাই করেও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না তারা বিটরুট ট্রাই করে দেখতে পারেন।


বিটরুট চোখের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং চোখের স্নায়ু টিস্যু গঠনে সহায়তা করে। চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং চোখকে সজীব রাখে। আপনাদের যাদের হজমের এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা বিটরুট খেয়ে দেখতে পারেন, কারণ এতে অত্যধিক পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করে।

বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। আপনাদের কারোর শরিরে রক্ত স্বল্পতা দেখা দিলে বিটরুট খেতে পারেন।যারা অনেক পড়েও কোন কিছু মনে রাখতে পারেন না তাদের জন্য বিটরুট অত্যন্ত উপকারী হতে পারে কারণ বিটরুট মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্রেইন কে সচল রাখে এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে।

ক্যান্সার যার অপর নাম মরণ ব্যাধি, যার নির্দিষ্ট কো চিকিৎসা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি, বিটরুট সেই কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরকে লড়তে সহায়তা করে। কোলন ক্যান্সার থেকে বাচতে নিয়মিত বিটরুট খেতে পারেন। নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার ফলে শরির থেকে অনেক পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ বের হয়ে যায় যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, কিডনি সুস্থ থাকে।

যাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বেশি তারা বিটরুট খেতে পারেন, বিটরুট রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। বিটরুটে রয়েছে বিটেইন যা যকৃতে চর্বি জমতে বাধা দেয়। বিটরুট চেহারা উজ্জ্বল করে যার ফলে ব্যবহারকারীকে কমবয়সী দেখায়।

বিটরুট জুস এর উপকারিতা

এবারে আসুন বিটরুট জুস এবং স্মুদি এর উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা যাক। বিটরুট জুস এবং স্মুদি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। নিয়মিত সেবনের ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পেটে ব্যাথা বা আলসার জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিটরুট জুস এবং স্মুদি খেতে পারেন। বিটরুট জুস এবং স্মুদি যকৃত এবং লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী বিটরুট জুস এবং স্মুদি রয়েছে বিটেইন যা যকৃত এবং লিভারে চর্বি জমতে দেই না।

বিটের অপকারিতা

অত্যন্ত উপকারী এই সবজিটির প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা থাকলেও এর কিছু অপকারিতা ও শেবনবিধি রয়েছে। বিটরুট একটানা নিয়মিত না খেয়ে সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন খাওয়া ভালো। বিটরুটে থাকা নাইট্রেটস রক্তনালীকে প্রসারিত করে রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। সেজন্য যাদের নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তাদের এটি ব্যাবহার করা উচিত নয় কারণ এটি রক্তচাপ আরো কমিয়ে দেয়।


বিটরুটে এলার্জির রয়েছে, তাই যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের বিটরুট ব্যাবহার করের পর যদি সমস্যা দেখ দেই তাহলে তাদের বিটরুট ব্যাবহার করা উচিত নয়। যাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে তাদের বিটরুট ব্যাবহার করা উচিত নয়। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যা রক্তে শর্করা অনেক পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়।

বিটরুট পাউডার খাওয়ার নিয়ম

আর পাঁচটা হেলথ ড্রিংক্স যেভাবে সেবন করতে হয় সাধারণত বিটরুট তার ব্যতিক্রম নয়। শরীরকে ফিট রাখতে এবং শরীরে বিটরুট এর গুনাগুণ সঠিক ভাবে পৌঁছে দিতে সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন দুই গ্রাম বিটরুট খাওয়া প্রয়োজন। ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সাথে এক চা চামচ মানে দুই থেকে তিন গ্রাম বিটরুট পাওডার মিসিয়ে সেবন করলে ভালো উপকার পাবেন বলে আশা করি। এছাড়াও আপনি যদি দিনের অন্য কোন সময়েও বিটরুট খেতে চান তাহলে নির্দ্বিধায় খেতে পারেন।

বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়

বিটরুট যেহেতু একটি সবজি সেহেতু এটি কাচা এবং রান্না করে দুভাবেই খাওয়া গেলেও কাচা খেলে এর বেশি উপকার পাওয়া যায়।আপনি বিটরুটকে বিভিন্ন সবজির সাথে মিক্সড করে রান্না করে খেতে পারেন। এছাড়াও বিটরুট কে গাজর, শসা বা টমেটোর মতো সালাত করেও খাওয়া যায়। বর্তমানে তো বিটরুট এর জুস এবং স্মুদিও প্রচুর জনপ্রিয়।

বাচ্চাদের বিটরুট খাওয়ার নিয়ম

শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে বিটরুট বাচ্চাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটা খাবার। বাচ্চাদের পুষ্টিগুণ ঘাটতির জন্য যে সকল রোগ হয়ে থাকে বিটরুট সেগুলো প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। যে শিশু রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে তাকে নিয়মিত এই সবজিটি খাওয়ানো উচিত। তবে শিশুকে বিটরুট খাওয়ানোর জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে এক বছরের নিচের শিশুদের বিটরুট খাওয়ানো উচিত নয় কারণ এক বছরের নিচের শিশুদের বিটরুট খাওয়ালে তাদের এটি হজম করতে সমস্যা হয়।


এক বছর পর শিশুকে প্রতিদিন দুই চামচ করে বিটরুট খাওয়ানো যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে বিটরুট খাওয়ার পর শিশুর যদি কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে বিটরুট খাওয়ানো বন্ধ করে দিতে হবে।পরবর্তীতে কখনো বিটরুট খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।

বিট রুট পাউডার কখন খাওয়া উচিত?

সকালে ঘুম থেকে উঠে বিটরুট পাউডার খেলে তা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।কিন্তু আপনি যদি দিনের অন্য কোন সময়ে বিটরুট পাউডার খেতে চান তাহলে কোন সমস্যা নেই। আপনার যখন খুশি আপনি খেতে পারেন। তবে শেবনবিধি মেনে বিটরুট পাউডার সেবন করা উচিত। এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ বিটরুট পাউডার মিশিয়ে খেতে পারেন ভালো উপকার পাবেন বলে আশা করছি।

বিট পাউডার পানিতে কতটুকু দিতে হয়?

বিটরুট পাওডার পানিতে এক থেকে দেড় চা চামচ দিতে হয়। কম বেশি হলে সাধারণত সমস্যা হয় না যদি আপনার কোন বিশেষ সমস্যা না থাকে। সেইজন্য নিরাপদ হলো নিয়ম মত ব্যাবহার করা। এক থেকে দেড় চা চামচ বা দুই থেকে তিন গ্রাম পাওডার পানিতে মিশিয়ে সেবন করা উত্তম হবে।আপনার হজম শক্তি যদি খুব ভালো হয় তাহলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আরো বেশি ব্যাবহার করতে পারেন।

লেখকের মন্তব্য। বিটের উপকারিতা ও অপকারিতা

বিটরুট অনেক ঔষধি ও পুষ্টি গুন সমৃদ্ধ একটি সবজি। আপনি এটিকে কাচা খান বা রান্না করে অথবা পাওডার বানিয়ে তাতে কোন জায় আসে না। এটি যেভাবেই আপনার শরীরে যাক না কেন এটি তার কাজ করা শুরু করবে। তবে বিটরুট নিময় অনুযায়ী ব্যাবহার করলে আপনি বেশি ভালো ফল পাবেন।আবার চেষ্টা করবেন যেসব ক্ষেত্রে এই আর্টিকেলে বিটরুট ব্যাবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে সেগুলি এড়িয়ে চলার,নয়ত হিতে বিপরীত হতে পারে।

এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে এই ওয়েব সাইটের অন্য আর্টিকেলগুলি পড়তে পারেন। এতক্ষণ ধরে এই আর্টিকেলটি পড়ার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ , আশা করছি আপনি ম্যাজিক টেক আইটির সাথেই থাকবেন !!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ম্যাজিক টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url